

নারীরা কেন স্বামীর পদবি গ্রহণে ইচ্ছুক?
সাইফ হোসেন সুমন (২৮)। একজন ব্যাংকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠিনী নিশাত তাসনিমের (২৯) সাথে বন্ধুত্ব।বন্ধুত্ব থেকে ধিরে ধিরে প্রেম। প্রনয়কে পরিণয় দিতে দুজনের আবদ্ধ হওয়া বিবাহ বন্ধনে। বিয়ের পর নিশাত নিজের নামের সাথে সাইফের পদবী যুক্ত করতে চাই শুনে তো সাইফ খুবই খুশি।
হেনা ওয়াল্টার (৩০)। নেহাতই করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে পিছিয়ে যায় বিয়ে টা। সামনের বছরের জুলাই তে বিয়ে করতে যাচ্ছে ব্রাইস জেনসন কে।যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা তে দুজনে একত্রে একটা রেস্তরা চালায়। ভালবাসার মানুষটির সাথে বিয়ের তারিখ যতো এগিয়ে আসছে, হেনার উত্তেজনা ততোই উর্ধগতিতে বাড়ছে। তবে তার সবচেয়ে বেশি উত্তেজনার কারণ হচ্ছে, এই বিয়ের মাধ্যমেই সে আনুষ্ঠানিকভাবে তার প্রেমিকের পদবি গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
দুটো ঘটনাই সত্য, শুধু গোপনীয়তা রক্ষার্থে স্থান, কাল, পাত্র কিছুটা বদলানো হয়েছে। লক্ষ করুন, দুটি ঘটনাতেই পাত্র-পাত্রী আধুনিক কালের বাসিন্দা। নারীবাদ যখন নতুনভাবে আবারো তার প্রতিবাদে সবর হয়ে উঠেছে, নারীরা যখন নিজ অধিকার রক্ষার্থে প্রাণপণে সচেষ্ট, তখনও তারা নিজের স্বামীর পদবি গ্রহনে আগ্রহী। বলা বাহুল্য, স্বামীর পদবি গ্রহন করা আক্ষরিক ভাবেই চরম পুরুষতান্ত্রিক সমাজের একটি প্রথা।
যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ জনে প্রায় ৭০ জন নারীই বিয়ের পর স্বামীর পদবি গ্রহন করেন। ব্রিটেনে এ সংখ্যা আরও বেশি, সেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ নারী বিয়ের পর নিজের নামের শেষে স্বামীর পদবি যুক্ত করে থাকে। এসব নারীদের ৮৫ ভাগই ১৮ থেকে ৩০ বয়সী। যুক্তরাষ্ট্র আর যুক্তরাজ্যের মাঝে এই সংখ্যার তারতম্যের কারণ হচ্ছে, দুই জায়গায় নারীবাদের সংজ্ঞা ভিন্ন। যুক্তরাষ্ট্র আর যুক্তরাজ্যের ৩০ অনূর্ধ্ব নারীদের যথাক্রমে ৬৮ শতাংশ ও ৬০ শতাংশ নিজেদের নারীবাদী হিসাবে দাবি করে।


ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যুক্তরাজ্য এর অধ্যাপক সিমন ডানকানের বক্তব্য অনুসারে,
“ আধুনিক এই যুগে পৌছেও নারীদের ভেতর স্বামীর পদবি গ্রহনের এতো প্রবণতা সত্যিই আশ্চর্যকর। স্বামীর পদবি গ্রহনের এই চর্চাটি আসলে, বিয়ের পর স্ত্রীকে স্বামীর অধিকৃত করে নেওয়ার ধারণার সমর্থক। এটি অত্যন্ত দখলদারিত্বমূলক মনোভাব। বিয়ের মাধ্যমে নারীকে অধিকৃত করে নেওয়ার ধারণার বিলুপ্তি যদিও অনেক আগেই ঘটেছে, কিন্তু বিয়ের পর পদবি বদলে ফেলার প্রথা এখনো বেশিরভাগ ইংরেজি ভাষাভাষীদের মধ্যে রয়ে গেছে। “
ইউরোপের গ্রিস, স্পেন আর আইসল্যান্ড, এ মহাদেশের এই তিন টি দেশ ছাড়া বাকি অধিকাংশ দেশেই নারীদের বিয়ের পর স্বামীর পদবি গ্রহনের রীতি রয়েছে। এমনকি সমলিঙ্গবাদের স্বর্গরাজ্য ও পুরুষতান্ত্রিকতা বিরোধী হিসাবে পরিচিত দেশ যে নরওয়ে, সেখানেও বেশিরভাগ নারী নিজের স্বামীর নামে পরিচিত হতে পছন্দ করে। প্রশ্ন হলো, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অধিকাংশ নারীই নিজের সক্ষমতার প্রমাণ দিতে পারার সত্বেও কেন, এক্ষেত্রে তারা স্বনির্ভর হতে যথেষ্ট সচেষ্ট নয়?
সিমন ডানকান আর তার সহকর্মীদের গবেষণার দুটি বিষয় বিশেষত উল্লেখযোগ্য। এই গবেষণা বিশ্লেষণ করে বলতে গেলে, বলা যায় নারীদের নাম পরিবর্তনের নানান কারণ থাকতে পারে। পারিবারিক পদবির উত্তরাধিকারীত্ব যার সূত্রে পাওয়া, সে জীবিত না থাকা বা অপছন্দের মানুষদের একজন হওয়া বা নিজের পদবি টা তার ব্যক্তিগতভাবে স্রেফ পছন্দ না হওয়া। আসলে কারণ গুলো সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত ও গুরুত্বহীন।


নারীদের এ আচরনের ২টি প্রণিধানযোগ্য কারণ আছে। প্রথমটি হলো, পুরুষতান্ত্রিকতার বলিষ্ঠ উপস্থিতি। সদ্য বিবাহিত যুগল পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার ধারক কি না, সেটা এখানে খুব একটা বড় ব্যাপার না, তবে তারা হতে পারে শুধুই এ প্রথায় বিশ্বাসী আর কেও বুঝে কেও হয়তো না বুঝেই এই নিয়মের পুনরাবৃত্তি করে চলেছে। দ্বিতীয় কারণটি হলো, অনেক নারীদের ধারণা এ প্রথার পালন তাদের একজন সুযোগ্য স্ত্রী এবং দায়িত্বশীল মা হওয়ার স্বার্থে প্রয়োজন। স্বামীর নাম গ্রহনের মধ্য দিয়ে নারীরা স্বামীর প্রতি আসলে দায়বদ্ধতা দেখাতে চায়। তারা মনে করে, যে এভাবে তারা তাদের পরিবার কে এক সুতোয় বেধে রাখছে।
স্রোতের বিপরীতে গিয়ে যদি কোনো নারী তার স্বামীর নাম গ্রহনে আপত্তি জানায় এবং এই যুক্তি রাখেন যে বিয়ের পরও তিনি নামের মতো ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের একটি মৌলিক দিককে তার স্বামীর নামের মাঝে হারিয়ে ফেলতে চায় না, তবে সেখানেও তাকে বাধা পেতে হয়। পশ্চিমা কোনো দেশে কোনো নারী স্বামীর নাম গ্রহণে অনিচ্ছুক হলো, তার স্বামী ত্বরিত জবাব দেয় যে, তাহলে বিয়ের করার কারণ টাই তো পূরণ হচ্ছে না! এইসব স্বামীদের কাছে তাদের স্ত্রীদের নাম পরিবর্তন এতোটাই জরুরি, যে অন্যথায় তারা বিয়ে না করাটাই শ্রেয় বিবেচনা করে।
আরেকটা বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ্য। ভেবে দেখুন তো, নিজেদের নারীবাদী দাবি করা দেশগুলোর নানা সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান, টিভি সিরিজ বা চলচ্চিত্রে কোনো নারীকে প্রথমবার ঠিক কি ভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তার নাম ও পেশার সাথে সাথে তিনি বিবাহিতা হলে, কার স্ত্রী তা বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু কোনো পুরুষের ক্ষেত্রে কি কখনো দেখেছেন, এভাবে নিয়ম মেনে তার স্ত্রীর নাম তার পরিচিতির সাথে উল্লেখ করা হচ্ছে? এখান থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে সমাজে একজন একক, স্বাধীন ব্যক্তি বা একটি মৌলিক স্বত্বা হিসাবে একজন নারী পরিচিতি পায় না। একজন নারী, তা সে একজন শিক্ষক, পরিচ্ছন্ন কর্মী বা নেতা কিংবা আমলা, যা-ই হোক না কেন, যদি বিবাহিতা হয় তবে সে কার স্ত্রী তা সমাজের কাছে অত্যন্ত জরুরি বিষয়।


নারীদের প্রায়সময় অভিযোগ করতে দেখা যায় যে সন্তানের প্রাথমিক যত্নের দায়িত্ব একজন মাকেই সর্বদা বহন করতে হয়।বাচ্চা অসুস্থ হলে মাকেই সব যত্ন ও দেখাশোনা করতে হয়, বাচ্চার পড়াশোনার খেয়াল রাখতে সব সময় মাকেই কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নিতে হয়,আর এমন উদাহরণ অসংখ্য। তাদের এমন অভিযোগ ও আসে যে সন্তানের লালন পালনে স্বামীর অংশগ্রহণ নিতান্তই কম হওয়াই তাদের কর্মজীবনে অত্যধিক ক্ষতি হয়। আবার সেই তারাই ক্ষেত্রবিশেষে স্বামীর নাম সেচ্ছায় গ্রহন করে থাকে, এবং সেটাকে নিজের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ মনে করে। এবং বেলাশেষে এমন দুমুখো ব্যবহার নারীবাদের উদ্দেশ্য পূরনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।


নারীদের অনেকেই আবার বিয়ের পর নিজের নাম পরিবর্তনকে অন্যভাবে দেখে। নারীবাদ মূলত নারীদের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে। জোরপূর্বকতার স্বীকার না হয়ে কোনো নারী সেচ্ছায়, ভালবেসে তার স্বামীর নাম গ্রহন করতে চাইলে সেটি তার ব্যক্তি-স্বাধীনতা। এখানে ব্যাপার টা পুরুষতান্ত্রিকতার পক্ষে না কি বিরুদ্ধে, সেটা কোনো বড় বিষয় নয়। এবার আপনাদের কাছে প্রশ্ন, আপনি কি এই ধারণাতে বিশ্বাসী না কি আপনার মতে আজীবন নিজের নাম অক্ষুণ্ণ রাখা নারীদের জন্যে অধিক সম্মানজনক?
According to Binance, this is the best trading robot in the world.
https://www.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fvk.cc%2Fc8kz55&sa=D&35=18&usg=AFQjCNEYo6mWXSP9gUinA8sLtVU0jLXlbQ
Because he is able to make 200% profit every day.
For example, you replenished your brokerage account with $ 500 (EUR, GBP, etc.) and he earned you from $ 1000 in net income within a day. Binance recommends using this particular trading robot for automated trading.
https://www.google.com/url?q=https%3A%2F%2Fvk.cc%2Fc8kz55&sa=D&54=00&usg=AFQjCNEYo6mWXSP9gUinA8sLtVU0jLXlbQ